আপনার স্বাস্থ্যবান একটি ছাগল অধিক পরিমাণ দানাদার খাদ্য খেয়ে হঠাৎ করেই খিচুনি দেখা গেল এবং মারা গেল। এমন ঘটনা খামারিদের কখনো কখনো প্রত্যক্ষ করতে হয়। এটি একটি বিশেষ রোগ, যাকে বলা হয় এন্টেরোটক্সিমিয়া। আজকে আমরা জানবো ছাগলের এন্টেরোটক্সিমিয়া রোগের চিকিৎসা, কারণ, প্রতিরোধ, প্রতিকার ইত্যাদি সম্পর্কে।
আজকের এই আর্টিকেলে যে সকল বিষয়ে আলোচনা করতে চলেছি–
- ছাগলের এন্টেরোটক্সিমিয়া রোগের কারণ
- ছাগলের এন্টেরোটক্সিমিয়া রোগ কোন বয়সে হয়?
- ছাগলের এন্টেরোটক্সিমিয়া রোগের লক্ষণ
- ছাগলের এন্টেরোটক্সিমিয়া রোগের প্রতিকার
- ছাগলের এন্টেরোটক্সিমিয়া রোগের প্রতিরোধ
- ছাগলের এন্টেরোটক্সিমিয়া রোগের চিকিৎসা
ছাগলের এন্টেরোটক্সিমিয়া রোগের কারণ
যখন একটি ছাগল বেশি পরিমাণ দানাদার খাদ্য গ্রহণ করে তখন এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে। বেশি দানাদার খাদ্য গ্রহণ করলে ছাগলের ক্ষুদ্রান্ত্রে এক ধরণের ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ করে। এই ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমনের ফলেই ছাগল এন্টেরোটক্সিমিয়া রোগের আক্রান্ত হয়।
ছাগলের এন্টেরোটক্সিমিয়া রোগ কোন বয়সে হয়?
যদিও ছাগলের এন্টেরোটক্সিমিয়া রোগে আক্রান্ত হওয়ার নির্দিষ্ট কোনো বয়স নেই। তবে কম বয়সী বাড়ন্ত ছাগলের এই রোগে আক্রান্তের হার অনেক বেশি। কিছু ক্ষেত্রে বয়স্ক ছাগলেরও এন্টেরোটক্সিমিয়া রোগে আক্রান্ত হতে দেখা যায়। তবে চিকিৎসকেরা একমত হয়েছেন যে এন্টেরোটক্সিমিয়া রোগ কোনো নির্দিষ্ট বয়সে হয় না, বরং যেকোনো বয়সেই হতে পারে।
ছাগলের এন্টেরোটক্সিমিয়া রোগের লক্ষণ
এই রোগটি একটি তাৎক্ষণিক রোগ, অর্থাৎ যে কোনো মুহূর্তে একটি ছাগল এন্টেরোটক্সিমিয়া রোগে আক্রান্ত হতে পারে। এ রোগে আক্রান্ত হলে পূর্ব থেকে কোনো লক্ষণ প্রকাশ পায় না, বরং দানাদার খাদ্য গ্রহণের পর থেকেই কিছু কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায়।
কিন্তু এই লক্ষণগুলো প্রকাশ পাওয়ার পরেও খুব কম সময়ের মধ্যে ছাগলটি মৃত্যুবরণ করতে পারে। তবুও যে সকল লক্ষণ দেখে রোগটি চিহ্নিত করা যায় সেগুলো হচ্ছে–
- ছাগল অতি দুর্বল হয়ে যায়
- দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না
- পা কাঁপতে থাকে
- অস্থিরতা লক্ষ্য করা যায়
- পাতলা পায়খানা হয়
- চারদিকে হাঁটতে থাকে
- পা চারিদিকে ছড়াছড়ি করতে থাকে
- হঠাৎ করেই মারা যায়।
ছাগলের এন্টেরোটক্সিমিয়া রোগের প্রতিকার
যেহেতু এন্টেরোটক্সিমিয়া রোগ অতিরিক্ত দানাদার খাদ্য গ্রহণের ফলে হয়ে থাকে, তাই এর একমাত্র প্রতিরোধ হচ্ছে ছাগলকে অতিরিক্ত পরিমাণের দানাদার খাদ্য না খাওয়ানো। একমাত্র এই কাজটি করলেই ছাগলের এন্টেরোটক্সিমিয়া রোগ থেকে প্রতিকার পাওয়া সম্ভব।
ছাগলের এন্টেরোটক্সিমিয়া রোগের চিকিৎসা
ছাগলের রোগের কোন চিকিৎসা নেই। সত্যি বলতে কি এন্টেরোটক্সিমিয়া রোগে আক্রান্ত হলে ছাগলটি কয়েক মিনিটের মধ্যেই মৃত্যুবরণ করে। তাই পদক্ষেপ নেওয়ার মতো কোনো সুযোগ পাওয়া যায় না। কিন্তু ছাগলের রোগের কয়েকটি লক্ষণ দেখে যদি খামারি রোগটি চিহ্নিত করতে পারেন, তবে কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করে ছাগলটির প্রাণ বাঁচানো সম্ভব।
এন্ট্রফিন সালফেট ইনজেকশন ও স্যালাইন প্রদান করলে ছাগলকে বাঁচিয়ে তোলা সম্ভব। পাতলা পায়খানা ফলে ছাগলের দেহ থেকে প্রচুর পানি ও লবণ বের হয়ে যায়। স্যালাইন প্রয়োগের মাধ্যমে ছাগলের শরীর থেকে বের হয়ে যাওয়া পানি ও লবণ অভাব পূরণ করা সম্ভব।
অতিরিক্ত দানাদার খাদ্য গ্রহণ করার ফলে এন্টেরোটক্সিমিয়া রোগ হয়ে থাকে। এটি একটি তাৎক্ষণিক রোগ, যার ফলাফল অতি দ্রুত মৃত্যু। তাই অনেক সময় খামারিরা রোগটিকে চিহ্নিত করতেই পারেন না। ছাগলের রোগের সুনিদৃষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই।
কিন্তু একজন খামারি যদি সতর্ক থাকে, তবে ছাগলের এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলেই চলে। ছাগলের খাদ্য তালিকায় অবশ্যই দানাদার খাদ্য রাখতে হবে, কিন্তু তা মোটেও সীমার অতিরিক্ত হওয়া চলবে না। ছাগল যাতে নিজে থেকে অতিরিক্ত দানাদার খাদ্য না গ্রহণ করে সেক্ষেত্রেও বাধা দিতে হবে এবং ছাগলকে খাবার ঘর থেকে দূরে রাখতে হবে।
আমার দুটি বাচ্চা ছাগলে বয়স আনুমানিক চার থেকে পাঁচ মাস হঠাৎ করে পাতলা পায়খানা হয়েছে এবং কি কারণে পাতলা পায়খানা হয়েছে জানিনা। তো এখন আমি কি চিকিৎসা সেবা নিতে পারি, দয়াকরে বিস্তারিত তথ্য জানতে চাই।